দাউদ ইব্রাহীম সমগ্র ভারতের সীমানা পেরিয়ে আধিপত্য বিস্তার করেছেন পাকিস্তান ,দুবাই ,পর্তুগাল , সহ পুরো উপমহাদেশে। দাউদ এর জন্ম ১৯৫৫ সালে ভারতের মহারাষ্ট্রে। সাধারণ ভাবে বলতে গেলে দাউদ ইব্রাহীম মুম্বাই শহর এর মাফিয়া ডন। তবে তার অপরাধ বৈচিত্রতা তার শুধু একজন মাফিয়া ডন হওয়ার পরিচয়কে ছাপিয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারপোল লিস্ট এ অবস্থান নেয়া দাউদ অপরাধ সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করেন ভারতের বাইরে বসে। কখনো দুবাই ,কখনো পর্তুগাল কখনো বা সরাসরি মুম্বাইতে বসে।
জনবহুল শহর মুম্বাইতে তার আধিপত্য রয়েছে সব খাতেই। মুম্বাইতে স্থাপিত বলিউড চলচিত্র শিল্পের সাথে গভীর সম্পর্ক রয়েছে দাউদের। দাউদ ইব্রাহীম হলেন ভারতের "মোস্ট ওয়ানটেড ম্যান " রাষ্ট্রের সাথে দাউদ এর সরাসরি শত্রুতা শুরু হয় ১৯৯৩ সালে মুম্বাই বিস্ফোরণ সংঘটনের পর হতে। ভারতের আধুনিক ইতিহাসে যাকে আক্ষা দেয়া হয় "ব্ল্যাক ফ্রাইডে বলে। ৩০০ জন নিহত হয় ,১৩০০ এর মত পঙ্গুত্ব বরণ করেন।
২০০৩ সালে দাউদ ইব্রাহীম কে মার্কিন সংস্থা গুলো বৈশ্বিক সন্ত্রাসী হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করে। ২০১৪ সালের মোদী -ওবামা বৈঠকে দাউদ ইব্রাহীম ইসু স্থান পায়।
বাক্তিগত দাউদ ইব্রাহিম
চোখে পরিহিত অরিজিনাল রে এন্ড বেন এর এভিয়াটর ,ইতালিয়ানি সুটেড , জাপানি ব্র্যান্ড জুতো , সুইস ঘড়ি ,সিগনেচার পারফিউম। এককথায় দেখতে অমায়িক জাতি ভদ্রলোক। আকর্ষণ করার ক্ষমতা ভীষণ রকমের।১৯৮০ ও ১৯৯০ দশকের সমগ্র ভারত মাতানো জনপ্রিয় অভিনেত্রীরা দাউদ ইব্রাহিমের প্রেমে হাবু -ডুবু খেয়েছেন। অলিখিত ভাবে একক সম্রাট ছিলেন চলচিত্র জগতের। অবধি মুম্বাই তে চলচিত্র নির্মানে লগ্নি করছেন কোটি-কোটি টাকা। ভারতের চলচিত্র কে আন্তর্জাতিক ভাবে অর্থ উপার্জন কৌশল বাতলে দিয়েছেন তিনি। খুব সাধারণ পরিবারে বেড়ে ওঠা দাউদের। এখন দাউদ সরাসরি কোনো কাজ করেন না ,ডি কোম্পানি সুপারি নিয়ে থাকে। অপহরণ ,উসুলি ,ভয় তৈরী ,ভাংচুর , হত্যা, ইত্যাদি নিয়ন্ত্রিত হয় লোকাল গ্যাং দ্বারা যারা আবার ডি-কোম্পানি অন্তর্ভুক্ত। অবাধ তার নেটওয়ার্ক , বৈচিত্র তার অপরাধ। ভারতে মাদক বানিজ্য ,পতিতালয় ,অস্ত্র ব্যবসা ,চোরাচালান , পর্নো ব্যবসা ,আবাসিক হোটেল , পরিবহন ,সহ নানা ধরন এর অবৈধ ব্যবসা পরিচালনা করছেন এ মাফিয়া ডন।
উপমহাদেশে একটা রীতি আছে ভারতের শত্রু অর্থাৎ পাকিস্তানের বন্ধু। তার সম্পর্কে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা গুলোর বক্তব্য দাউদ ইব্রাহীম পাকিস্তান -আফগানিস্তান সীমান্ত ঘেষা এলাকায় মাঝে মধ্যেই সফর করেন। ডি কোম্পানির হেড কুয়াটার দুবাই। আরব গালফ অঞ্চলে ব্যবসা রয়েছে তার। তার কোনো ছবি মিডিয়া তে আসে না। পুরাতন ছবি গুলো আছে শুধু। ছেলের বিয়েতে ভারতে এসেছিলেন ঠিকই গোয়েন্দা গণ শত চেষ্টা সত্তেও ধরতে পারেন নি তাকে। দাউদের ছেলে মাহরুক এর বিয়ে দিয়েছেন পাকিস্তানি ক্রিকেটার জাভেদ মিয়াদাদ এর মেয়ের সাথে।
ভারতে আই পি এল কে জুয়ার ব্যবসা বানিয়ে কোটি -কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন দাউদ। খেলা পাতানো তার বর্তমান ব্যবসা। বেশকিছু অন লাইন সাইট বলছে দাউদের মূলত ব্যবসা রিয়েল -এস্টেট। যাকে পুজি করে সে অবস্থান করছেন দুবাই তে।
কয়েকটি দেশের গোয়েন্দা সংস্থার সাথে হটলিংক রয়েছে তার। মার্কিন তথ্য বলে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আই.এস. আই সাথে লিয়াজো রয়েছে তার। তা ছাড়া আল - কায়েদা নেটওয়ার্ক ভালো দাউদ ইব্রাহিমের । লস্কর -ই -তাইয়েবা সাথে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিদ্যমান। মধ্যপ্রাচ্যে মানি লন্ডারিং বা হুন্ডি ব্যবসা আছে তার ডি কোম্পানির।
২০১১ সালে ফোর্বেস ম্যাগাজিনের শীর্ষ ১০ অপরাধীর তালিকায় ছিলেন দাউদ ইব্রাহিম।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন