বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৪

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার , আমার অভিজ্ঞতার দিনলিপি -১

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার , আমার অভিজ্ঞতার দিনলিপি -১


 রুমি রায় চৌধুরী , (ফরাসী দৈনিক লে ফিগারো তে  কর্মরত আলোকচিত্রী )


লাইন ধর ,কথা কম। ফাইল এ ববি ,নড়াচড়া বন। ঘন্টা খানেক ,তারপর চেক,সেখান থেকে আমাদের নিয়ে যাওয়া হলো আমদানি তে। আমদানি হলো সদ্য হাজতিদের স্থান। বলতে ভুলে গিয়েছিলাম ,গারদ থেকে মাহুতটুলির আসতে হয়েছে যে গাড়িতে সেই প্রিসন ভানে ৬০ জন হব আমরা। তার ঘোর তখন পর্যন্ত কাটেনি।

আমদানিতে আসার পর জ্ঞান দিলেন একজন সিনিয়র কয়েদী। ভালোভাবে বুঝিয়ে দিলেন কোনরকম নিয়ম বহির্বূত কাজ চলবে না এখানে। একজন কারারক্ষী বললেন  "জায়গা -সম্পত্তি বেইচা বাইর হইতে হইব " । তার আগে তাজমহল দেখানো হলো আমাদের। তাজমহল সম্পর্কে বলি তাজমহল একটি শিল্প -কর্ম  যা অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ,শিল্পকর্মটি তৈরী করেছেন ২ কয়েদী যারা সম্পর্কে পিতা -পুত্র।

মিথ্যে বলবোনা ,আমদানিতে আমাদের আপায়ান করা হয় ভাজা মাছের একটি টুকরো দিয়ে। রাত্রে ঘুমাতে যেয়ে টের পাই ,বেশ কঠিন রকম গাদাগাদি। কোনভাবে রাত টা পার করতে হবে। সেখান থেকে একটা বিষয় শিখেছিলাম সিগারেট হলো ফার্স্ট কারেন্সী ইন জেল। সিগারেট এ  প্রায় সব হয় এখানে।

ফজর হওয়ার আগে , যে যে নামাজ পরবে তাদের জন্য দুবার সতর্ক ডাক দেয় কারারক্ষী রা।
সকাল হওয়ার সাথে সাথে টেবিল এ বসেন কর্মকর্তা। সবার পরিচয় জেনে কার্ড তৈরী করেন তিনি। আমার "মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তান " সুরত দেখে তিনি আমার সাথে ভালো ব্যবহার করলেন। জানতে চাইলেন শারীরিক কোনো আঘাত পেয়েছি কিনা।
সাফ জানালাম  ,না

কার্ড তৈরী হলো। তার পর লোটা -কম্বল এর জন্য লাইন এ দাড়াতে হলো । তখন পর্যন্ত আমি গন্তব্যহীন। শুধু ফ্যাল -ফ্যাল করে মানুষের দিকে চেয়ে থাকি। কিছুই জানি না , পরিবেশ টাও কেমন জানি। তখন শুধু আব্বা -আম্মার কথা মনে পরছিল আর সময় পেলেই কানতাম।

চলবে ............................................

  

শনিবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০১৪

গণমাধ্যমের খোলা চিঠি -১

সংবাদ কি ,সংবাদ কি রকমের ভূমিকা পালন করে আমাদের সমাজে। এক প্রকারের খোজ করার জায়গা থেকে ছোট একটি বিশ্লেষণ লেখা তৈরী করার চেষ্টা করছিলাম। সংবাদ এক প্রকারের যোগাযোগ , সংবাদ শুধু  টেলিভিসন এর পর্দায় বা দৈনিক সংবাদ পত্রে প্রকাসিত হয় না। সংবাদের ব্যাপ্তি ২৪ ঘন্টাময়। লোকমুখে শোনা কারো মৃত্যুর খবর কেউ আমরা সংবাদ বলতে পারি। সংবাদের বস্তুনিস্ততা নিয়ে আমাদের আলোচনা। সমসাময়িক গণমাধ্যম আমাদের সংবাদ প্রাপ্তির একমাত্র আস্থাস্থল। দেশ বিদেশের সংবাদ আমরা সহজে পেয়ে যাই ইন্টারনেট এর কল্যাণে।

গণমাধ্যম  কেমন , কি তার অভ্ভন্তরীণ  মতাদর্শ  তা আমাদের জানা প্রয়োজন। তাহলে আমরা সংবাদের গ্রহণযোগ্যতা জানতে পারব। বরেণ্য সাংবাদিক তুষার আব্দুল্লার প্রকাশিত "গণমাধ্যম কার মাধ্যম " বই তে লিখেছেন

"কার হয়ে কাজ করছেন তারা ? পাঠক ,দর্শক ,শ্রোতা  কাছে যে খবরটি তুলে ধরছেন তা কতটা সঠিক ,নাকি কর্পোরেট এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন তারা"। 




বানিজ্যিক মানদন্ড , সংবাদ এর মানদন্ড হতে পারে না। অমুক ব্যাঙ্ক সংবাদ শিরোনাম  বলে যা প্রচারিত হয় তার অন্তনিহিত মন্ত্র কি ? ব্যবসা নয় তো ? সংবাদ মাধ্যম জনগনের চোখ ও কান। এ বিষয়ে বানিজ্যিক করণ নীতি পরিহার একমাত্র সমাধান। পুজিবাদী মনোভাব যেন গিলে না ফেলে জনগনের ভরসাস্থল।  কর্তৃপক্ষ বিষয় টি নিয়ে ভাববেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করছি। নাইমুল ইসলাম খান সাহেবের "সাংবাদিকতার প্রথম পাঠ " বইটি থেকে একটি উক্তি দিয়ে শেষ করতে চাই 

"বস্তুনিষ্ট সাংবাদিকতার বিকাশ ঘটেছিল সাংবাদিকতার ইতিহাসের বিকাশের অংশ হিসাবেই "

লেখক ------ আইন ছাত্র (৩য় বর্ষ )
                   ফ্রিল্যান্স সংবাদ কর্মী 
                   সহকারী মুখপাত্র ( বাংলাদেশ 'ল' এসোসিয়েশন, ছাত্র উইং )

বুধবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০১৪

শহীদ বুদ্ধিজীবী এস ,পি মুন্সী কবিরউদ্দিন আহমেদ


শহীদ বুদ্ধিজীবী এস ,পি মুন্সী কবিরউদ্দিন আহমেদ 





কুমিল্লার পুলিশ সুপার মুন্সী কবিরউদ্দিন আহমেদ ১৯৭১ সালে ২৩ মার্চ গোয়েন্দা সুত্রে জানতে পেরেছিলেন পাকিস্তানি আর্মি পুলিশ লাইন আক্রমন করবে। দৃঢ় চিত্তে প্রতিজ্ঞা বদ্ধ ছিলেন পুলিশ লাইন পাকিস্তানিদের কন্ট্রোলে যেতে দিবেন না। পুলিশ লাইন এর অস্ত্র -গোলাবারুদ  কোনোভাবেই যেন পাকিস্তান আর্মির করায়ত্ত না হয়।
২৩ মার্চ পাকিস্তানি আর্মি হামলা করেনি। পাকিস্তানি সেনা আক্রমন চালায় ১৯৭১ এর ২৫ মার্চ রাতে।  শহীদ বুদ্ধিজীবী এস,পি মুন্সী কবিরউদ্দিন কুমিল্লা পুলিশ লাইন এ প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন। পাকিস্তানি সেনা বাহিনীর যুদ্ধাস্ত্রর বিপক্ষে টিকতে পারেনি তার প্রতিরোধ ইউনিট। ভোরের দিকে কুমিল্লা পুলিশ লাইন  দখল করে নেয় পাকিস্তানি সেনারা।

অসংখ পুলিশ সদস্য কে হত্যা করা হয়। ২৬ মার্চ  সকালে পাকিস্তানি সেনা বাহিনী শহীদ বুদ্ধিজীবী এস ,পি মুন্সী কবিরউদ্দিন আহমেদের সরকারী বাসভবনে হানা দেয়। স্ত্রী ,বৃদ্ধ মা ,পাচ সন্তানের আহাজারি পাকিস্তানি সেনাদের আটকাতে পারেনি। মুন্সী কবিরউদ্দিন এর বৃদ্ধ মা তাকে বুকে জড়িয়ে রেখেছিলেন। মাকে তিনি বলেছিলেন "মা ,আমি এক্ষুনি চলে আসবো ,তুমি চিন্তা করোনা "

এটাই তার শেষ যাওয়া , তিনি আর ফিরে আসেননি। তার লাশ পাওয়া যায় নি। ২৬ মার্চ কুমিল্লার ডি ,সি  এবং এস, পি  কে হত্যা করা হয়।


শহীদ বুদ্ধিজীবী সুখরঞ্জন সমদ্দার

শহীদ বুদ্ধিজীবী সুখরঞ্জন সমদ্দার 



জন্ম :ইলুহার গ্রাম ,বরিশাল

স্থানীয় বাইশারী স্কুল থেকে ১৯৫২ সালে মেট্রিকুলেসন। বরিশাল বি ,এম কলেজ থেকে আই ,এ পাস করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৮ সালে সংস্কৃতে (অনার্স ) পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংস্কৃতে এম,এ ডিগ্রী লাভ করেন।

১৯৫৮-১৯৫৯ সালে গোপালগঞ্জ কলেজ এ অধ্যাপনা শুরু করেন। ১৯৬০ এ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত অনুষদের লেকচারার পদে যোগদান।  
সুখরঞ্জন সমদ্দার মুক্ত চিন্তার মানুষ ছিলেন। অসাম্প্রদায়িক চিন্তার চেতনার কারণে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে খ্যাতি অর্জন করে ছিলেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি রবীন্দ্র ও নজরুল সঙ্গীত চর্চা করতেন।

১৯৭১ এর ১৪ ই এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের কুয়াটার থেকে পাকিস্তানি ফোর্সেস সদস্যরা  তাকে ধরে নিয়ে যায়। তিনি আর ফিরে আসেন নি।

শহীদ বুদ্ধিজীবী এস ,এম ফজলুল হক

শহীদ বুদ্ধিজীবী  এস ,এম  ফজলুল হক  



জন্ম :মোহনপুর, নওগা
জন্ম তারিখ :১৯৩২

রাজশাহী সরকারী কলেজের গণিতের অধ্যাপক ছিলেন। সংস্কৃতিমনা  ছিলেন ,নাটক ও আবৃত্তি তে আগ্রহ ছিল  তার। উচ্চ শিক্ষিত পরিবারের সন্তান। ছাত্র অবস্থায় বিয়ে করে ছিলেন। এম.এস.সি  পাস করেন ১৯৫৯ সালে। ১৯৬০ সালে নওগাঁ বি .এম  .সি কলেজ এ লেকচারার পদে যোগদান করেন।  ১৯৬৫ সালে ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজ এ বদলি হন।

১৯৭১ র মার্চে নওগাঁ নিজ গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন। সে সময় বাঙালি -বিহারী  যুদ্ধ চলছিল বিভিন্ন জায়গায়।
১৯৭১ ২৫শে এপ্রিল ভোর রাতে পাকিস্তানি মিলিটারি শহীদ এস ,এম  ফজলুল হক এর বাড়ি ঘিরে ফেলে। এলোপাথারি ব্রাশ ফায়ার চালায় পাকিস্তানি আর্মিরা। ফজলুল হক সহ তার মা ,নানী ,ভাই -বোন্  সবাই কে হত্যা করা হয়। তাদের বাড়িতে একই সাথে ১২ জন শহীদ হয়েছিলেন।

শহীদ ফজলুল হক এর নসীবে কবর জোটেনি ,নরপশুরা গর্ত করে শহীদদের মাটি চাপা দেয়।


******তথ্য গুলো কোনো ওয়েব থেকে পাওয়া যায় নি।**********

শহীদুল্লা কায়সার

শহীদুল্লা কায়সার

  

জন্ম : মযুপুর ,ফেনী ,নওয়াখালী
জন্ম তারিখ : ১৬ ফেব্রুয়ারী ১৯২৬
পেশা :সাংবাদিক ,সাহিত্যিক

১৯৪৬ সনে কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে অর্থনীতি তে অনার্স সহ বি.এ পাস করেন। ১৯৪৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে এম. এ ক্লাসে ভর্তি হন। সাংবাদিক শহীদুল্লা কায়সারের হাতেখড়ি হয় সাপ্তাহিক ইত্তেফাক পত্রিকা দিয়ে। উনিশো আটান্ন সালে সংবাদ এর সহকারী সম্পাদক পদে যোগদান করেন। ১৯৫২ তে  সরাসরি ভাষা আন্দোলনের জড়িত ছিলেন। ছাত্রজীবন থেকেই বাম ঘরানার রাজনীতিতে যুক্ত হন ,পরে কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হন। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে একই বছরের ৩ জুন গ্রেফতার হন।  ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত জেলে বন্দী ছিলেন। ১৯৫৮ সালে পাকিস্তানি শাসক আইয়ুব খানে আমলে পূনরায় কারারুদ্ধ। ১৯৬২  সেপ্টেম্বর মাসে মুক্তি পান।

রাজনীতি ,সাংবাদিকতার সাথে কথা সাহিত্যিক হিসেবে সুনাম অর্জন করেছিলেন শহীদুল্লা কায়সার। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার যুদ্ধ শুরু হলে অন্যান্য বুদ্ধিজীবিদের দেশ থেকে অন্যত্র চলে যাওয়ার পরামর্শ দিলেও নিজে মাতৃভূমি ছেড়ে কোথাও যান নি। ১৯৭১ এর ১৪ ডিসেম্বর  ঘাতক দল তাকে তার কায়তটুলির বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায়   ।

প্রকাসিত গ্রন্থ

১. পেশোয়ার থেকে তাসখন্দ (১৯৬৬)
২.সারেং বৌ (১৯৬২)
৩.  সংশপ্তক  (১৯৬৫)
৪.রাজবন্দীর  রোজনামচা (১৯৬২)
৫. তিমির বেলায়
৬. দিগন্তে ফুলের আগুন
৭. কৃষ্ণচূড়া মেঘ

পুরস্কার সমূহ 
১.আদমজী সাহিত্য পুরস্কার
২.বাঙলা একাডেমি পুরস্কার
৩. স্বাধীনতা পুরস্কার ১৯৯৮ (মরণোত্তর )

মঙ্গলবার, ২ ডিসেম্বর, ২০১৪

                                             বাংলাদেশ 'ল' এসোসিয়েশন ( স্টুডেন্ট উইং )               

                                                         নর্দান বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ

                                                                    প্রেস বিজ্ঞপ্তি

নর্দান বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ এর  আইন অনুষদের  সম্মানিত ডীন জনাব প্রফেসর ড . আব্দুল হক কে  অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য মনোনীত করায়   আইন বিষয়ক গবেষণা ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ 'ল' এসোসিয়েশন ( স্টুডেন্ট উইং ) এর পক্ষ থেকে ০২/১২/২০১৪ ইং তারিখে এক অনাড়ম্বর ছাত্র সম্বর্ধনা প্রদান করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল প্রভাষক ও ছাত্র -ছাত্রীরা উপস্থিত ছিলেন। 
ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য তার বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্র -ছাত্রীদের যুগোপযুগী শিক্ষা গ্রহণ করে দেশের কল্যাণে ব্রত হওয়ার পরামর্শ  প্রদান করেন। 
অনুষ্ঠানটি সঞ্চলনায় ছিলেন বাংলাদেশ 'ল' এসোসিয়েশন ( স্টুডেন্ট উইং ) এর  মুখপাত্র  কাইয়ুম হোসেন নয়ন ।
সংগঠনের পক্ষে শুভেচ্ছা  বক্তব্য রাখেন রিয়াজুল ইসলাম ,মারুফ রায়হান খান ও তানভীর আলম খান।




বাংলাদেশ ল এসোসিয়েশন এর পক্ষে 
        তানভীর আলম খান